স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় পৃথকস্থানে কুকুর ও শেয়াল বাঁচাতে গিয়ে দুই মোটরসাইকেল চালক নিহতের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল সকালে শহরের জাফরপুর এলাকার যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের সামনে কুকুর বাঁচাতে গিয়ে মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছে ধাক্কা লাগে। এতে আলামিন (২৫) এক যুবক নিহত হয়েছেন। অপরদিকে গতকাল রাত ১২টার দিকে রামনাগর-ভালাইপুর সড়কে শেয়াল বাঁচাতে গিয়ে মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সাইফুল ইসলাম (৪৫) নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন মোটরসাইকেল আরোহী এনামুল হক (৪২)।
জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গার ভালাইপুর-রামনাগর সড়কে শেয়াল বাঁচাতে গিয়ে মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সাইফুল ইসলাম (৪৫) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন মোটরসাইকেল আরোহী এনামুল হক (৪২)। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ভর্তি করা হয়েছে। গতকাল সোমবার রাত ১২টার দিকে ভালাইপুর-রামনগর সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত সাইফুল ইসলাম চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার আলুকদিয়া ইউনিয়নের হাতিকাটা গ্রামের মোড়পাড়ার ওয়াজের ম-লের ছেলে। এবং আহত এনামুল একই এলাকার বাসিন্দা।
পরিবারের সদস্যরা জানায়, রাতে একই মোটরসাইকেলযোগে ব্যক্তিগত কাজে সাইফুল ইসলাম ও এনামুল যাচ্ছিলেন ভালাইপুর-রামনগর সড়ক দিয়ে যাচ্ছিলেন। মোটরসাইকেল চালক ছিলেন সাইফুল ইসলাম। এসময় চলন্ত মোটরসাইকেলের সামনে হঠাৎ একটি শিয়াল চলে আসে। সাইফুল ইসলাম মোটরসাইকেলের ব্রেক করলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুজনই পাকা রাস্তার ওপর ছিটকে পড়েন। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান সাইদুল। পরে স্থানীয়রা দুজনকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসক সাইফুল ইসলামলে মৃত ঘোষণা করেন।
জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সোহরাব হোসেন ফেয়ার টিভিকে বলেন, রাতে মৃত অবস্থায় সাইফুল ইসলামকে জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন স্থানীয়রা। ধারণা করা হচ্ছে তার বুকসহ শরীরের বিভিন্নস্থানে গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছিলেন। মরদেহ লাশঘরে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশকে জানানো হয়েছে।
এর আগে সকালে কুকুর বাঁচাতে গিয়ে মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে আলামিন হোসেন নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন। গতকাল সোমবার সকাল ৮টার দিকে চুয়াডাঙ্গা-ঝিনাইদহ সড়কের যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত আলামিন (৩০) চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার কলোনীপাড়ার আব্দুল হালিমের ছেলে। তিনি পেশায় সিগারেট কোম্পানির বিক্রয়কর্মী হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মোটরসাইকেলযোগে নিজ বাড়ি থেকে জাফরপুরে নিজ অফিসে যাচ্ছিলেন আলামিন হোসেন। পথে চুয়াডাঙ্গা-ঝিনাইদহ মহাসড়কের জাফরপুরে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের সামনে পৌঁছুলে মোটরসাইকেলের সামনে একটি কুকুর চলে আসে। কুকুরটি বাঁচাতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশের একটি গাছের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এ ঘটনায় তিনি গুরুতর জখম হন। স্থানীয়রা তাকে দ্রুত উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সকাল ১০টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. শাপলা খাতুন বলেন, আলামিনের মাথা, মুখম-ল সহ শরীরের বিভিন্নস্থানে গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছিল। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ভর্তি করা হয়। এর সোয়া একঘন্টা পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর শেফালি খাতুন ফেয়ার টিভিকে বলেন, আলামিনের একটি চার বছর বয়সী মেয়ে আছে। গতকাল সকালে বাড়ী থেকে জাফরপুরস্থ অফিসে যাওয়ার পথে এ দুর্ঘটনা ঘটে। গতকাল বিকেলে জানাজা শেষে মরদেহ দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ওসি সেকেন্দার আলীফ ফেয়ার টিভিকে বলেন অবেদনের পেক্ষিতে সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত শেষে বিনা ময়নাতদন্তে মরদেহ পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক শাপলা খাতুন বলেন, আমরা ওই রোগীকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ভর্তি রেখেছিলাম। এর ঘণ্টাখানেক পরেই তার মৃত্যু হয়।
এদিকে, গতকাল দুপুরে বিনা ময়নাতদন্তে আলামিনের মরদেহ তার পরিবারের নিকট হস্তান্তর করে পুলিশ। বিকেলে জানাজার নামাজ শেষে নুরনগর কলোনিপাড়ার গোরস্থানে দাফন সম্পন্ন করা হয়।