এ সরকারের মেয়াদ কতদিন হবে তা নিয়ে এখনও কোনো স্পষ্ট বার্তা পাওয়া যায়নি। তবে সরকারের মেয়াদ কতদিন হতে পারে তার সম্ভাব্য সময় জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান।
রোববার (১৭ নভেম্বর) আলজাজিরার প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে এ বিষয়ে কথা বলেন তিনি। আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলনে (কপ২৯) এ সাক্ষাৎকার দেন তিনি।
অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ নিয়ে আল জাজিরার নিক ক্লার্ক জানতে চাইলে ড. ইউনূস বলেন, আমরা অন্তর্বর্তী সরকার। আমরা স্থায়ী সরকার নই। নিয়মিত সরকার পাঁচ বছরের হয়। নতুন সংবিধানে সরকারের মেয়াদ সম্ভবত চার বছর হতে পারে। কারণ মানুষ সরকারের মেয়াদ কম চায়। সুতরাং অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ চার বছরের কম হওয়া উচিত, তা নিশ্চিত। এটা আরও কম হতে পারে। এটা পুরোটা নির্ভর করছে মানুষ কী চায়, রাজনৈতিক দলগুলো কী চায় তার ওপরে।
রাজনৈতিক দলগুলো চাইলে আরও আগেই নির্বাচন হতে পারে জানিয়ে ড. ইউনূস বলেন, যদি রাজনৈতিক দলগুলো সংস্কার ভুলে গিয়ে নির্বাচন চায়, তাহলে সেটাই করা হবে। সেক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ চার বছর হচ্ছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস বলেন, আমি বলিনি যে চার বছর। আমি বলেছি, এটা সর্বোচ্চ মেয়াদ হতে পারে। তবে আমাদের উদ্দেশ্য তা নয়। আমাদের উদ্দেশ্য যত দ্রুত সম্ভব শেষ করা।
পুরো সরকার ব্যবস্থা সংস্কার হবে বলেও জানান ড. ইউনূস। তিনি বলেন, মানুষ নতুন কিছু চায়। সেখানে সব ক্ষেত্রে সংস্কার হবে। এমনকি সংবিধানও সংস্কার হচ্ছে। এ লক্ষ্যে বিভিন্ন সংস্কার কমিশন করার কথাও তুলে ধরেন তিনি। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বলেন, দুটো প্রক্রিয়া একসঙ্গে চলছে—নির্বাচনের প্রস্তুতি এবং সব সংস্কার শেষ করার প্রস্তুতি। নতুন বাংলাদেশ যে শুধু নির্বাচনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয় তা-ও জানিয়ে দেন ড. ইউনূস।
সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনার ভারতে পালিয়ে যাওয়ার প্রসঙ্গও উঠে এসেছে। ড. ইউনূস বলেন, শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছেন। ভারত থেকে বাংলাদেশে বিক্ষোভের ডাক দিচ্ছেন। এগুলো বাংলাদেশের জন্য উপকারী নয়। তাই ভারতের কাছে তারা এসব বিষয়ে বলছেন। শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনার আইনি প্রক্রিয়া চলছে বলেও জানান ড. ইউনূস। দোষী সাব্যস্ত হলে শেখ হাসিনার প্রত্যাবর্তন চাওয়া হবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান বলেন, আমরা যত এগিয়ে যাচ্ছি, আমাদের তত বেশি কাজ শেষ করতে হবে। আমরা কত দ্রুত রেললাইন স্থাপন করতে পারব তার ওপর ট্রেনের চূড়ান্ত গন্তব্যে পৌঁছানো নির্ভর করছে। আর এটি রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্যের মাধ্যমে ঘটবে।
তিনি বলেন, গত ১৫ বছরের অব্যবস্থাপনার কারণে বাংলাদেশ দুর্নীতির গভীরে তলিয়ে গেছে। এ সময় অব্যবস্থাপনা এবং অপশাসনের মাধ্যমে আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করা হয়েছে। ফলে পয়েন্ট বাই পয়েন্ট, সেক্টর বাই সেক্টর পুনর্গঠন করা বিশাল কাজ।