তিনি ভারতীয় বিমান বাহিনীর ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট ছিলেন। আত্মহত্যার আগে রেনু তানওয়ার তার স্বামীর সাথেই তাকে দাহ করার কথা জানিয়ে গেছেন। বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগ্রায় নিজের স্বামী এবং ভারতীয় বিমান বাহিনীর ফ্লাইট লেফটেন্যান্টের মৃত্যুর খবরে ভারতীয় সেনাবাহিনীর একজন ক্যাপ্টেন আত্মহত্যা করে মারা গেছেন।
গত মঙ্গলবার দিল্লির আর্মি ক্যান্টনমেন্টে অফিসার্স গেস্ট হাউসের একটি কক্ষে রেনু তানওয়ারকে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। ওই গেস্ট হাউসে একটি সুইসাইড নোট পাওয়া গেছে এবং সেখানে রেনু উল্লেখ করেছেন, তাকে তার স্বামী দীনদয়াল দীপের সাথে যে “হাতে হাত রেখে দাহ” করা হয়।
দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, সম্ভবত গত ১৪ এবং ১৫ অক্টোবরের মধ্যবর্তী রাতে আত্মহত্যার এই ঘটনাটি ঘটেছে।
ভারতের বিহার রাজ্যের বাসিন্দা দীপ আগ্রার ভারতীয় বিমান বাহিনীর স্টেশনে কর্মরত ছিলেন।
পৃথক প্রতিবেদনে সংবাদমাধ্যম ইটিভি ভারত বলছে, ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট দীনদয়াল দীপ গত ১৪ অক্টোবর রাতে আগ্রা এয়ার ফোর্স স্টেশন চত্বরে আত্মহত্যা করে মারা যান। আর তার স্ত্রী ক্যাপ্টেন রেনু তানওয়ার পরদিন মঙ্গলবার রাতে দিল্লিতে আত্মহত্যা করেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
রেনু আগ্রায় এমএনএস (মিলিটারি নার্সিং সার্ভিস) ক্যাপ্টেন ছিলেন। মায়ের চিকিৎসার জন্য তিনি তার ভাইয়ের সঙ্গে দিল্লি এইমস-এ গিয়েছিলেন। সেখানে তিনি দিল্লি ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় সেনাবাহিনীর গারুদা শরৎ অফিসার্স গেস্ট হাউসে অবস্থান করছিলেন।
তবে বুধবার সকালে তার মরদেহ পাওয়া যায়। তার মরদেহের কাছাকাছি একটি সুইসাইড নোটও পাওয়া গেছে যেখানে তিনি বলে গেছেন- তার স্বামীর সাথে তাকে দাহ করা উচিত।
এরপর বুধবার গভীর রাতে রেনুর মরদেহ আগ্রায় আনা হয়। ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট এবং তার স্ত্রীর মৃতদেহ আগ্রার এয়ার ফোর্স কম্পাউন্ডে রাখা হয়েছে। পরিবারের সদস্যরা বৃহস্পতিবার বিহারের নালন্দা বিহার শরীফের নিজ গ্রাম মোরারায় তাদের মরদেহ নিয়ে যাবে।
ভারতীয় এই সংবাদমাধ্যম বলছে, আগ্রা এয়ার ফোর্স স্টেশনে পোস্টিংয়ে থাকা ৩২ বছর বয়সী ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট দীনদয়াল দীপ ২০২২ সালের ডিসেম্বরে রাজস্থানের ক্যাপ্টেন রেনু তানওয়ারকে বিয়ে করেছিলেন। বিয়ের পর এই দম্পতি বিমান বাহিনী ক্যাম্পাসে তাদের বাসভবনে থাকতেন।
সোমবার গভীর রাতে দীপ আত্মহত্যা করেন বলে অভিযোগ। আগ্রার এসিপি লোহামান্ডি মায়াঙ্ক তিওয়ারি জানিয়েছেন, ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট সোমবার রাতে রাতের খাবার খেয়ে নিজের বাসভবনে ঘুমাতে যান। পরদিন মঙ্গলবার সকালে কর্মচারীরা দরজায় ধাক্কা দেয়। কোনো সাড়া না পাওয়ায় কর্মীরা কর্তৃপক্ষকে খবর দিলে দরজা ভেঙে দীপের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। তবে ঘটনাস্থলে কোনো সুইসাইড নোট পাওয়া যায়নি।
এসিপি লোহামান্ডি জানিয়েছেন, দীপের স্ত্রী গত ১৪ অক্টোবর দিল্লিতে গিয়েছিলেন। স্বামীর আত্মহত্যার পর শাহগঞ্জ থানা থেকে ক্যাপ্টেন রেনুর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
পরে দিল্লি পুলিশের ডিসিপি (দক্ষিণ-পশ্চিম) সুরেন্দ্র কুমার চৌধুরী ক্যাপ্টেন রেনু তানওয়ারের মৃত্যুর বিষয়টি এসিপি লোহামান্ডিকে জানান।