একইসঙ্গে বাজারভিত্তিক সুদের হার ও ডলারের বিনিময় হার ‘ক্রলিং পেগ’ পদ্ধতিতে নির্ধারণের সিদ্ধান্ত কার্যকর করেছে বাংলাদেশ। এর ফলে বুধবার ব্যাংকের সুদহার ও ডলারের দাম বেড়ে যায়। ডলারের দাম এখন ১১০ টাকা থেকে এক লাফে ১১৭ টাকা হয়েছে। সুদহার ক্ষেত্রভেদে এক টাকাও বেড়েছে। সর্বশেষ ব্যংক ঋণের সুদহার ছিল ১৩ দশমিক ৫৫ শতাংশ।
ব্যাংকের সুদহার বাজারভিত্তিক করায় ব্যাংকগুলো নিজেরাই ঋণ এবং আমানতের সুদহার নির্ধারণ করতে পারবে। আর বাংলাদেশ ব্যাংকও নীতি সুদের হার (রেপো) বাড়িয়েছে। ফলে ব্যাংগুলোকে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে হলে বেশি সুদ গুনতে হবে। মূলত আইএমএফের শর্ত মেনেই বাংলাদেশ ব্যাংক এই সংস্কার করেছে। আইএমএফ বাংলাদেশের জন্য তাদের তৃতীয় কিস্তির ঋণ ছাড়ের নিশ্চয়তা দিয়েছে। কিন্তু এই সিদ্ধান্তুগুলোর ফলে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কী প্রভাব পড়বে তা নিয়ে এখন আলোচনা চলছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এতদিন ডলারের বিনিময় হার অফিসিয়ালি কম রাখা হয়েছিল। এখন তা বাস্তব পরিস্থিতির কাছাকাছি গেছে। সুদের হার বাজারভিত্তিক হওয়াই বাস্তবসম্মত। এটা চাহিদা ও জোগানের ওপর ছেড়ে দেওয়াই ভালো।
গত ৯ মাস ধরে ব্যাংকের সুদের হারের জন্য ‘স্মার্ট পদ্ধতি’ চালু ছিল। তখন ‘সিক্স মান্থস মুভিং অ্যাভারেজ রেট অব ট্রেজারি বিল’ ভিত্তিক সুদ নির্ধারণ করা হতো। এখন যে বাজারভিত্তিক সুদহার চালু হলো, ২০২০ সালের এপ্রিলের আগেও তা ছিল। তবে এরপর কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদের হার নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে এই হার সর্বোচ্চ ৯ শতাংশে বেঁধে দিয়েছিল।
ডলারের দাম একবারে ৭ টাকা বাড়ানো হয়েছে বিনিময় হার নির্ধারণের ‘ক্রলিং পেগ’ পদ্ধতি চালুর অংশ হিসেবে। ‘ক্রলিং পেগ’ পদ্ধতি ভাসমান বিনিময় হারের আগের ধাপ। এই পদ্ধতিতে ঊর্ধ্ব বা নিম্নসীমা নির্ধারণ করা থাকে না। মধ্যসীমা থাকে। তার আশপাশে ডলারে বিনিময় হার নির্ধারণ করা হয়। বিশ্লেষকরা বলছেন, এর ফলে সব মিলিয়ে মূল্যস্ফীতি বাড়বে। তবে যদি পদ্ধতিগুলো ঠিক মতো কাজ করে, তাহলে সাময়িক কষ্ট হলেও পরিস্থিতি পরে স্বাভাবিক হয়ে আসবে।
তৈরি পোশাক প্রস্তুত এবং রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘ডলারের দাম বাড়ায় রপ্তানিকারকরা লাভবান হবে। আর আমদানিকারকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। রপ্তানিকারকরা টাকার হিসেবে বেশি অর্থ পাবেন। আর আমদানিকারকদের বেশি টাকায় ডলার কিনে আমদানি করতে হবে।