নারায়ণগঞ্জের বহুল আলোচিত সাত খুন মামলার বিচার দীর্ঘ ১০ বছরেও শেষ হয়নি। এতে স্বজনদের মাঝে ক্ষোভ ও ন্যায়বিচার পাওয়ার অপেক্ষা বাড়ছে। দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আসামিদের আপিলের পাঁচ বছর হয়ে গেলেও শুনানি শুরু হয়নি এখনও। আপিলের শুনানি শেষ করে দ্রুত হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন নিহতদের স্বজনরা
২০১৪ সালের এই দিনে (২৭ এপ্রিল) সাতজনকে অপহরণ করা করা হয়। অপহরণের তিনদিন পর একে একে তাদের মরদেহ শীতলক্ষ্যা নদীতে ভেসে ওঠে। এই ঘটনায় নিহত নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি ও নিহত আইনজীবী চন্দন সরকারের জামাতা বিজয় কুমার পাল বাদী হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় পৃথক দুটি মামলা করেন।
আসামিদের স্বীকারোক্তি, জবানবন্দি ও সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে ৩৩ মাস পর জেলা ও দায়রা জজ আদালত ২০১৭ সালের ১৬ জানুয়ারি রায় প্রদান করেন। রায়ে নিম্নআদালত ২৬ জনকে মৃত্যুদণ্ডসহ আরও ৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়। পরে উচ্চ আদালতে ১৫ আসামির মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রেখে অন্যান্য আসামির বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়। তবে দীর্ঘ প্রায় সাড়ে পাঁচ বছর ধরে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে মামলাটি শুনানির অপেক্ষায় আটকে আছে।
রায়ে সাবেক কাউন্সিলর নূর হোসেন, র্যাব-১১ চাকরিচ্যুত সাবেক অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদ, মেজর আরিফ হোসেন, লেফটেন্যান্ট কমান্ডার এম এম রানাসহ ২৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং সাতজনকে ১০ বছর করে এবং দুজনকে সাত বছর করে কারাদণ্ড দেন আদালত। সেই রায়ের বিরুদ্ধে আসামিপক্ষ আপিল করলে দীর্ঘ শুনানি শেষে ২০১৮ সালের ২২ আগস্ট উচ্চ আদালত ১৫ জনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ বহাল রাখেন। অন্য আসামিদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজাও বহাল রাখা হয়।
২০১৮ সালের নভেম্বরে হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। এরপর ২০১৯ সালে র্যাবের সাবেক কর্মকর্তা তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, আরিফ হোসেন, এম মাসুদ রানা, সাবেক কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত নেতা নূর হোসেনসহ দণ্ডিত আসামিরা পৃথক আপিল করেন। তবে দীর্ঘ প্রায় সাড়ে পাঁচ বছর ধরে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে মামলাটি শুনানির অপেক্ষায় আটকে আছে। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নিহতের স্বজনেরা।