ঝুঁকিপূর্ণ ও অনিরাপদ যাত্রায় শামিল না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে হাইওয়ে পুলিশের প্রধান অতিরিক্ত আইজি শাহাবুদ্দিন খান বলেছেন, ‘গত কয়েক বছরের ঈদ যাত্রা যেমন সুন্দর হয়েছে, নিরাপদ হয়েছে, স্বাচ্ছন্দ্যময় হয়েছে, যানজট মুক্ত হয়েছে, এবার আরও একটু ভালো স্বাচ্ছন্দ্যময়, যানজটমুক্ত ঈদ যাত্রা জনগণকে উপহার দিতে সক্ষম হব।’
আজ বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে গাজীপুরের কালিয়াকৈরের চন্দ্রায় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন হাইওয়ে পুলিশপ্রধান।
অতিরিক্ত আইজি শাহাবুদ্দিন খান বলেন, শিল্প-কারখানা অধ্যুষিত অঞ্চলের শ্রমিক ভাইয়েরা কিন্তু অনিরাপদ ও ঝুঁকিপূর্ণ যাত্রায় শামিল হন। খোলা ট্রাকে উঠে, পিকআপে উঠে, বাসের ছাদে উঠেন। এভাবে নানান ভাবে নিজের জীবনকে ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলে এবং অনেকবার দেখেছি এক্সিডেন্ট হয়ে বহু জীবন ঝড়ে পড়েছে।
সেইক্ষেত্রে আমরা বলব, আপনারা সচেতন ভাবে নিজের জীবনকে ভালোবেসে অনিরাপদ ও ঝুঁকিপূর্ণ যাত্রায় শামিল হব না। চালক, মালিক ও শ্রমিকদের উদ্দেশে হাইওয়ে পুলিশপ্রধান বলেন, আপনারা কোনো ভাবেই এ ধরনের খোলা ট্রাক, অনিরাপদ যেসব যানবাহন আছে, বিশেষ করে বাসের ছাদে, পিকআপে ও পণ্যবাহী বিভিন্ন যানে যাত্রী হবেন না। এসবে যাত্রীবহন বেআইনি, সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ, আপনারা কোনোভাবেই যাত্রী তুলবেন না। আমরাও বাংলাদেশ পুলিশের পক্ষ থেকে হাইওয়ে পুলিশ, জেলা পুলিশ, মেট্রোপলিটন পুলিশ রাস্তায় তৎপর আছি। আমরা কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নিব, কোনোভাবেই ঝুঁকিপূর্ণ অনিরাপদ যাত্রা করতে দেওয়া হবে না।
হাইওয়ে পুলিশপ্রধান আরও বলেন, ঈদ উপলক্ষে যে নিরাপত্তা সেবা আমরা দিচ্ছি, সেখানে আমাদের অনেক পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকে। আমাদের মোবাইল পেট্রল পার্টি থাকে, সাদা পোশাকে ডিউটি থাকে, আমাদের রেকার ব্যবস্থাপনা থাকে, অ্যাম্বুলেন্স ব্যবস্থাপনা থাকে। অনেক সময় কোনো কোনো গাড়ি বিকল হয়ে রাস্তায় যানজট তৈরি হয়, যাতে এগুলো কীভাবে উৎরাতে পারি? তার জন্য মহাসড়কের সব জায়গায় যে মেকার রয়েছে, যারা গাড়ি মেরামতকারী তাদের একটি তালিকা তৈরি করে প্রস্তুত রেখেছি, আমাদের কন্ট্রোল রুমেও রেখেছি। যাতে কোনো গাড়ি বিকল হলে দ্রুত সময়ের মধ্যে মেরামত করে চালু করে যানজট মুক্ত করতে পারি।
ঈদ যাত্রায় প্রযুক্তি ব্যবহার নিয়ে হাইওয়ে পুলিশপ্রধান বলেন, আমরা প্রযুক্তি ব্যবহার করেছি। যেকোনো প্রযুক্তি আমাদের সেবার মানকে বৃদ্ধি করে, আমাদের দক্ষতাকে বৃদ্ধি করে। এবারে আমাদের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সিসি ক্যামেরা আছে, এ ছাড়া চন্দ্রাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গাতে সিসি ক্যামেরা লাগিয়েছি। এটি দিয়ে আমরা রাস্তার পরিস্থিতি, যানজট পরিস্থিতি ও নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। এর সঙ্গে হাইওয়ে পুলিশ সদস্যদের যেখানে যে ডিউটি করছে প্রত্যেকের কাছে বডিওন ক্যামেরা থাকবে। আমরা একটি অনলাইন নেটওয়ার্ক সিস্টেমে কাজ করছি।
আমরা রিয়েল টাইম কন্ট্রোলে কিন্তু দেখতে পাচ্ছি, আমরা সেখানে কমান্ড দিতে পারছি, ট্রাফিক নিদের্শনা দিতে পারছি। এর সঙ্গে কিন্তু আমরা যুক্ত করেছি ড্রোন। গতবারও আমরা ড্রোন ব্যবহার করেছিলাম। যেখানে যানজটের সম্ভাবনা থাকে সেই সব জায়গাগুলোতে। এবারও আমরা ড্রোনের সংখ্যা বাড়িয়েছি, আবার ড্রোনের কোয়ালিট বৃদ্ধি করেছি। এবারে ড্রোন দিয়ে পিএম সিস্টেমের মাধ্যমে আমরা যাতে কথা বলে ট্রাফিক নির্দেশনা দিতে পারি, ডিউটিরত পুলিশ সদস্যদের নির্দেশনা দিতে পারব এবং জনসাধারণ, গাড়ির চালকদের নির্দেশনা দিতে পারব।