দেশের খাদ্য সংরক্ষণাগারগুলোর সম্মিলিত ধারণক্ষমতা ২১ লাখ ৮৬ হাজার মেট্রিক টন। অধিকাংশ খাদ্যগুদাম ১৯৬০, ৭০ ও ৮০’র দশকে নির্মিত। এসব স্থাপনা জরাজীর্ণ হয়ে ধীরে ধীরে কমছে ধারণক্ষমতা। বিশেষ করে উপকূলীয় এলাকার গুদামগুলোর অবস্থা বেশি নাজুক। বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় খাদ্যনিরাপত্তা বাড়াতে জরাজীর্ণ খাদ্যগুদামগুলো সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়।
সরকারের তথ্য অনুযায়ী, খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করতে খাদ্যশস্য সংরক্ষণের জন্য বর্তমানে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের আওতায় ৪৭৬টি উপজেলায় ৬৩৩টি স্থানীয় সরবরাহ ডিপো (এলএসডি), বিভিন্ন কৌশলগত স্থানে ১৩টি কেন্দ্রীয় সংরক্ষণাগার (সিএসডি), সমুদ্র ও নদী বন্দরকেন্দ্রিক ছয়টি সাইলো এবং বগুড়া জেলার সান্তাহারে একটি আধুনিক খাদ্য সংরক্ষণাগার (ওয়্যারহাউজ) আছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বিগত পাঁচ বছরে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের পরিচালন বাজেটে ১৫৫টি খাদ্যগুদাম ও ৬৮টি অন্য স্থাপনাসহ মোট ২২৩টি অবকাঠামো সংস্কার ও মেরামত বাবদ অর্থ বিভাগ থেকে মোট ১৯৪ কোটি ২৪ লাখ টাকা পাওয়া যায়, যা প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত অপ্রতুল।
এছাড়া উন্নয়ন বাজেটের আওতায় পুরোনো খাদ্যগুদাম ‘সারাদেশে পুরোনো খাদ্যগুদাম ও আনুষঙ্গিক সুবিধাদির মেরামত এবং নতুন অবকাঠামো নির্মাণ (দ্বিতীয় সংশোধিত)’ শীর্ষক প্রকল্পের অধীনে মোট ৫০৭টি খাদ্যগুদাম মেরামত ও সংস্কার করা হয়। স্বল্প ব্যয়ে এসব ক্ষতিগ্রস্ত, জরাজীর্ণ খাদ্যগুদাম এবং অন্য আনুষঙ্গিক অবকাঠামো মেরামত ও সংস্কার করলে খাদ্যশস্য ধারণক্ষমতা ঠিক থাকবে। খাদ্যের গুণগত মান বজায় রেখে অপচয় রোধ করাও সম্ভব। এ পরিপ্রেক্ষিতে ৪২৪টি খাদ্যগুদাম ও আনুষঙ্গিক অবকাঠামো মেরামত এবং সংস্কারের লক্ষ্যে ‘সারাদেশে অবস্থিত ক্ষতিগ্রস্ত খাদ্যগুদাম ও অন্যান্য স্থাপনা’ প্রকল্প হাতে নেওয়া হচ্ছে। প্রকল্পটি সম্পূর্ণ সরকারি অনুদানে মোট ৬৪৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়ন করা হবে। চলতি সময় থেকে জুন ২০২৭ মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। এরই মধ্যে প্রকল্পের প্রস্তাবনা পরিকল্পনা কমিশনে পাঠিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন অনুবিভাগ) মো. মহসীন জাগো নিউজকে বলেন, ‘দেশে অনেক জরাজীর্ণ খাদ্যগুদাম রয়েছে। বিশেষ করে কক্সবাজার ও উপকূলীয় এলাকায় বিদ্যমান খাদ্যগুদামগুলোর অবস্থা আরও খারাপ। কারণ এসব এলাকার পানি লবণাক্ত। যেগুলো আছে সেগুলো সংস্কার করা জরুরি।’