গর্ভে থাকা কোনো শিশুরই লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশ করা যাবে না বলে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ রায় হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোকে কঠোরভাবে মানার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের সমন্বয়ে গঠিত দ্বৈত বেঞ্চ এ রায় দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান। স্বাস্থ্য অধিদফতরের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী তীর্থ সলিল রায়। এছাড়া, রাষ্ট্র পক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশগুপ্ত।
গত ২৯ জানুয়ারি হাইকোর্টে মাতৃগর্ভে থাকা শিশুর লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশ সংক্রান্ত একটি নীতিমালা দাখিল করে স্বাস্থ্য অধিদফতর। নীতিমালায় বলা হয়, কোনও ব্যক্তি, হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ল্যাবরেটরি কোনো লেখা বা চিহ্ন বা অন্য কোনো উপায়ে শিশুর লিঙ্গ প্রকাশ করতে পারবে না। এ বিষয়ে কোনোরকম বিজ্ঞাপন দিতে পারবে না।
নীতিমালায় আরও ছিল, সরকারের মন্ত্রণালয়গুলো ডাক্তার, নার্স, পরিবার পরিকল্পনা কর্মী, টেকনিশিয়ান কর্মীদের নেতিবাচক ফলাফল সম্পর্কে ট্রেনিং দেবে এবং নৈতিকতা ও পেশাগত আচরণ বিষয়ে ট্রেনিং দেবে। হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টারসহ মেডিকেল সেন্টারগুলো এ সংক্রান্ত সব ধরনের টেস্টের ডাটা সংরক্ষণ রাখবে। হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টারসহ মেডিকেল সেন্টারগুলো ডিজিটাল ও প্রিন্ট মাধ্যমে লিঙ্গ সমতা এবং কন্যা শিশুর গুরুত্ব তুলে ধরে বিভিন্ন মেসেজ প্রচার করবে।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি মাতৃগর্ভে থাকা অবস্থায় অনাগত শিশুর লিঙ্গ পরিচয় রোধে নীতিমালা তৈরি করতে রুল জারি করে হাইকোর্ট। রুলে অনাগত শিশুর লিঙ্গ পরিচয় রোধে নীতিমালা বা নির্দেশনা তৈরি করতে বিবাদীদের ব্যর্থতা কেন অবৈধ ও আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না এবং অনাগত শিশুর লিঙ্গ পরিচয় নির্ধারণে নীতিমালা তৈরি করতে বিবাদীদের কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়।
এদিকে, হাইকোর্ট রুল জারি করলে এ বিষয়ে নীতিমালা তৈরির জন্য কমিটি গঠন করে স্বাস্থ্য অধিদফতর।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ২৬ জানুয়ারি অনাগত শিশুদের লিঙ্গ পরিচয় জানার উদ্দেশে পরীক্ষা ও লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশ বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে জনস্বার্থে হাইকোর্টে এ রিটটি করেন অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান।